বাক্‌ ১৫০ ।। এ্যালেইনা হোসেন

 


 

ময়ূর প্রকল্পে জোয়ার

 

সে বলেনি

'শুভতম ইচ্ছা! আমার প্রেম হতে বঞ্চিতা কবি!

জন্মক্রুদ্ধ তুমি সমস্বর বিরোধী

আমৃত্যু দাঙ্গার জবরদস্ত বন্দেগী'

বলেনি বলেনি উনত্রিশ তম শ্লোকে ঘোরের সেই গোলক-সওয়ার

বললেই গতর থেকে উগরে আসবে তাণ্ডবের তিখা জেহের।

 

শুনো শুনো ম(হা)লয়রথী শুনো

মোবারক বাত!

এইখানে দেখেছি বেহায়া ব্যাকবেঞ্চার জমিন

পূর্বপুরুষদের সমাধি থেকে উঠে আসা ব্যাঙাচি ধিক্কার

তারা ফজর ওয়াক্তে, অতি বর্ষার চ্যারিটি ওয়ার্ককে বলে ওঠে নাফরমানি

প্রতিটা ক্ষেতের অপচয়, তোমার অফিস টেবিলে কয়টুকরা বাতাসের ডিমভাজা রেখে আসে?

এমপ্লয়িগুলো সেই অনিচ্ছুক কৃষকগুলোর সিগনেচার চিনে?

শুনো শুনো পাঠক! উদ্যোগ নেশাতুর জীবিকা-সম্রাট এবং ভূমিপ্রেমিক

যুদ্ধ, কল্যাণ আর প্রেমের ভূজঙ্গ--একটা নারীর পায়ের নিষিদ্ধ দাগ ও লোম চেটেই বশ মেনেছিলো নীলাশ্লেষ গঙ্গা-জনকের

খুব শিশুতোষ তোমার এসব প্যারালাল মানবসেবী মোনাজাত

 

যদি দুটি হাত না মাপতে পারে

একটামাত্র এই একটামাত্র সরলরেখা

যেটা চরে বসে ব-(দ্বীপ)দনাম ধরে হেঁটেছিলো ওঁম নদীর সমবায়ে

সত্য দেবীদের তেরোটা তেরোটা জ্যামিতি উদ্ধার উল্লাস;

শুনো হে প্রদর্শনের জাত ভাতশিল্পী

সটান পিতা!

পায়ের সেই দাগগুলোয় যদি কপালের ভাজ আলতা-শিক্ষিত না হয়

তোমাকেও গুণতে হতে পারে, আযহা'র আসল ওয়াদার বিবিধ আরাফাত।

 

এ জন্মঘনত্বের দিন

আবারো দুটো তরবারি নিয়ে হাজির

চোখবাধা চোখলাগা জরায়ু তারা খোচায় খোচায়!

 

বলো কবিত্ব

বলো প্রেম

চন্দ্রপ্রভাব

জীবনানন্দের কেতু হায়

এইসবকিছুর রক্ত মেখে তারা দ্বৈত মাতমে হুমকি বিকার

সাবধান! পিতা! আলিশান আশিক!

 

নাভি ভেদ করে সেই দুটো তরবারি যদি

নিজেদের শরীর ফিরে পেয়ে বনে যায় বেজন্মা ত্রিশূল

ছুটে যাবে ধি ধি ধিক্কার সেবন করা তোমার নির্বোধ কৌমার্যে!

 

দায় আছে দায়, দেবীদ্বার খোলার আগে পানি বলকানোর দশা

দ্বারহীন পুত্রের ফ্লাস্কের পানি ভরানোর আগের ঠকঠক

 

ঋতুস্রাব-সহ মাতৃত্বের দশ মাসিক ডেসপারেট স্টিকার

ঘুরপাকে, আঠাহীন জ্বলছে ঠায়! এক খামোশ বুধগ্রহ--সেই আদরের অতি অদেখা পুত্রের পেন্সিলবক্সে।

 

হ্যাঁ আমারই পুত্র! সৎ-সতী-তপ্ত মাতা যার, মাত্রা থেকে মহামাত্রায় নাযিল হয় ভিন্ন সব ট্রায়াঙ্গালে

 

যে দেবশিশুকে পার্থিব পড়া শেখাচ্ছো হে একক পিতা!

সে দুর্গতির এগারো সন্ধ্যা নাশের বাইশটা ডিম ভাঙণ

কুমারী বন্ধ্যার ডিম্বাণুদ্বয়ে ছড়াকাব্য ছড়াছড়ি।।।

 

 

 

 

কোজাগরী কালোর গুপ্তকথা

 

 

ভুখা হৃদয়ের আসামী! দণ্ড নাও ঠোঁটের প্রান্তরে

গ্রীবার গ্র‍্যাভিটি টান; জিভ খুঁড়ে ফেলে সাত পাতাল

মরণ মরিয়া এ ঘরে

হাশর ভাঙা কাঁচ

কাঁপছে রুহুর ডাকনাম, ভৈরবী ঘন্টা

 

গোনাহের বিছা লুটানো বেশরম শনিবার

শ্বাসের মাতলামি, বাতাস বরবাদ

ঠোঁট বিজলিতে ছিন্ন মহাকালের গর্দান!

বৈশাখ ঝড়ের নীলনকশা বিপাক

 

বুকে এক চুমুতে মুছে দাও, যতো প্রেতাত্মাদের

তোলপাড়

জেনেছি প্রেম এক কোকিলপাখি-- সুর বাঁধে শুধু

ঘর বাঁধা জানা নাই তার

 

 

 

 

দুটো তরবারি ধরে আছে অন্ধ সম্রাজ্ঞী

 

 

নীরবতার মুখে অন্ন তুলে দেওয়া প্রেয়সী আমার

বেদুইনরে দেবতা মানা সান্ধ্য কয়েদিনী!

তুমি কি ভুলে গেছো? কিভাবে নিজের শিশুর জন্য দুগ্ধহারা এক উলঙ্গ মায়ের দুধ ভিক্ষা দেখে, সেইদিনের এবং আগের সমস্ত যৌন লাঞ্ছনা তোমার স্তন ত্যাগ করেছিলো? কিংবা যখন, তোমার ঘরে অক্সিজেনের যোগান বন্ধ হয়ে গেছিলো, কিভাবে ফাঁটা পলেস্তারারে শেকড়ের পটভূমি মেনে এঁকেছিলে দেয়াল গাছ, আর খুলে দিয়েছিলে ফুসফুসের যতো গোপন সুড়ঙ্গ? কিভাবে ভুলে যাও যে প্রথম ঋতুস্রাবেরও আগে মাতৃত্ব অর্জন করেছিলে যতো বেওয়ারিশের, যারা জীবনের বেইমানিতে ঈমান এনে থেকে যেতো কাচে ও পলিথিনে? আর বহুবার এক শানকি ভরা ভাতের ভাপে যে কিষাণীর ঘাম তোমার মুখ ভেজাতো, তারই মাঝে মূর্ত হয়েছিলো ভুলে যাওয়া তোমার যতো ধেনো বেড়ে ওঠা?

 

 


1 comment:

  1. সবগুলোই ভালো লেগেছে। ব্যতিক্রমী মনে হয়েছে।

    ReplyDelete