বাক্‌ ১৫০ ।। তৈমুর খান


 

সাক্ষাৎকার

 

ভালোবাসার মাছগুলি খেলে বেড়াচ্ছে বিকেলের জলে

বুড়বুড়ি তুলছে আর কম্পন ছড়িয়ে পড়ছে

সম্মোহন দেখছে দূর থেকে

আজ আর জলে নামবে না!

সম্মোহন, আজ দার্শনিক হয়ে গেলে?



গৈরিক আলোরা এসে ছবি তুলছে

নিজেরই মুখোমুখি নিজে

একান্ত সাক্ষাৎকারে বসেছে একাকী



মাছেরা লাফাচ্ছে রুপোলি চকচকে

সশব্দ জলের গানে পদ্ম ওঠে দুলে

আশ্চর্য পিচ্ছিল আবেদনগুলি

ছিটকে পড়ে পাতায় পাতায় টলমল করে



অনেক প্রশ্নের পর,অনেক উত্তরের পর

আজ শুধু স্তব্ধতাই কাম্য মনে হল?

মাছের প্রসঙ্গগুলি ডুবে গেল জলে

এমন নরম বিকেলে একা শুধু উদাসীন




কামারশালা

 

এই বাড়ি, ওই বাড়ি সমস্ত বাড়ি থেকেই

ধোঁয়া ও আগুন বের হচ্ছে

কেউ কেউ পুড়ছে,কেউ কেউ পোড়াচ্ছে

দাহ ও দহন থেকে

ধোঁয়া ও উত্তাপ ভাগ করে নিয়ে যাচ্ছে বাতাস



এবার শীত নামছে বলে

কুয়াশা চাদর মেলে দিচ্ছে রোদে



আমাদের জংধরা অব্যবহৃত ইন্দ্রিয়গুলি

কোনো অলৌকিক কামারশালায়

বিনির্মাণে মেতে আছে




 নাচের স্কুল

 

আমি ওর পেখম ছুঁই না

কেননা সে ময়ূর নয়

তবু বেশ নাচে,পেখম মেলে দেয়

লাল টুকটুকে হৃদয়ে কম্পন তোলে



স্বর্গে যাওয়ার ইচ্ছে নেই আর

এইখানে মাটি ও খড়ে

নাচের ইশকুল বানাই



মূর্ধন্য দন্তন্য সবাই এসে নাচ শিখে যাবে

ব্যঞ্জনবর্ণ-স্বরবর্ণে আবার সবাই উচ্চারিত হবে

বিদ্যাসাগরের মুখোমুখি কুমারী পৃথিবী তরঙ্গ ফিরে পাবে




 মাখন

 

সমস্ত ধারণাগুলি মাখন

উপলব্ধির তস্তরি ভরে

আজ মাখন খাওয়াই নিজেকে



শব্দগুলি ঝকঝকে চামচ

ইচ্ছেদের ক্রিয়ায় সচল

স্তবকে স্তবকে মাখন উঠে আসে



আমরা দরিদ্র ছিলাম?

নিরুত্তরের হাসির ফোয়ারায়

নৈঃশব্দ্যের রোদ ঝরে 



সকাল জুড়ে জীবনের ঘ্রাণ

হতাশার জং ছেড়ে গেছে

কল্পনার গালে চুমু খেয়ে উঠে দাঁড়াই

7 comments:

  1. সামান্য ছবিরা সব অসামান্য রঙে খেলা করছে শব্দের জাদুতে। 🙏

    ReplyDelete
  2. প্রতিটি লেখাই অসম্ভব রকমের উজ্জ্বল। আলোকিত হলাম।

    ReplyDelete
  3. অপূর্ব জীবন বোধ। ভাবনার বিন্যাস বারবার শিক্ষিত করে।‌‌‌ সমৃদ্ধ হলাম।

    ReplyDelete
  4. চমৎকার কবিতাগুলি। অভিনন্দন কবি।

    ReplyDelete
  5. আপনার লেখা পড়ে মন্তব্য করার জ্ঞান নেই। শুধু বলবো আরও লিখুন।

    ReplyDelete