বাক্‌ ১৫০ ।। ফয়েজ আহমেদ ফয়েজের দুটি কবিতা ।। অনুবাদ- শুভ চক্রবর্তী


 

রাজপথ

 

একটি হতাশার রাজপথ অনন্তে মিলায়,

 তার চোখ সুদূর দিগন্তে স্থির হয়ে আছে

 তার বুকের ঠান্ডা কলঙ্কের উপর,

 আর ধূসর সৌন্দর্য ছড়িয়ে পড়ে

 যেন কোনো দুঃখবিলাসী নারী

 তার নিঃসঙ্গ গৃহে, চিন্তায় হারিয়ে গেছে।

 তার ময়ুরের লাগি মিলনে ঘুঙুর 

 প্রতিটি ছিদ্র ঘা, ক্লান্তিতে স্থবির

 

 

 

একটি কারাগারের সন্ধ্যা

 

প্রতিটি নক্ষত্র একেকটা সিঁড়ির ধাপ 

রাত্রি নেমে আসে সন্ধ্যার সেই

ঘোরালো সিঁড়ি বেয়ে।

খুব কাছে বয়ে যায় গাঢ় বাতাস

যেন কেউ ভালোবাসার কথা বলছে।

উঠোনে, গাছেদের শুষে নেওয়া উদ্বাস্তু...

আকাশে ফিরে যাওয়ার জন্য 

মানচিত্র এঁকে যায় নিখুঁত মুহূর্ত পর্যন্ত...

কোঠার চাঁদ - ভালোবেসে, উদারভাবে -

সেই নক্ষত্র ঢেকে দেয় ধুলোর চাদরে

প্রতিটি কোণ থেকে, গাঢ়-সবুজ ছায়া,

ঢেউয়ের মতো,আমার দিকে নেমে আসে।

যে কোন মুহূর্তে তারা আমাকে ভেঙে ফেলতে পারে,

যন্ত্রণার ঢেউয়ের মতো,প্রতিবারই মনে পড়ে প্রেমিকের এই বিচ্ছেদের কথা।

এই চিন্তা আমাকে সান্ত্বনা দেয়:

যদিও অত্যাচারীরা আদেশ দিতে পারে যে-কোনো মুহূর্তে প্রদীপগুলি ভেঙে ফেলা হবে

সেই কক্ষে, যেখানে আমাদের দেখা হয়,

তারা চাঁদ বের করতে পারে না,  তাই আজ

অথবা আগামীকাল,কোনও অত্যাচারই সফল হবে না,

অত্যাচারের বিষ আমাকে আর তিক্ত করে না,

যদি এক সন্ধ্যায় এই কারাগার

এত অদ্ভুত মিষ্টি হতে পারে,

যদি এই পৃথিবীর কোথাও এই একটি মুহূর্তও থাকে।

No comments:

Post a Comment