অরণ্যকম্পন
সেদিন কী অপূর্ব চাঁদ উঠেছিল আকাশে! ঘরেতে দুয়ার এঁটে একটি
পুরুষ হারিয়ে গেল অরণ্যে। ঝড় হলো—বিদ্যুৎ চমকালো। পুকুরের জলে লাফ দিলো ব্যাঙ। থরথর
কেঁপে উঠলো গাছপালা— পাতা ও শাখা— পাখি ও রমণী। এই দেখে দুজনে হেসে উঠলো—এক অতিলৌকিক
হাসি।
কাহিনীটা এ পর্যন্ত বাস্তব ছিল। পরাবাস্তব হয়ে গেল এ ঘটনার
দশ মাস দশ দিন পর—
আমার জন্ম হলো। তবে কবিতা লেখা ছাড়া কোনো কর্মই হলো না। জীবনজুড়ে
কোনো চমৎকার নাই। শুধু সাদা পৃষ্ঠায় অক্ষর বসিয়ে সেদিনের সেই পুরুষ-রমণীর সফল অরণ্যকম্পনের
চিহ্ন এই পৃথিবীতে রেখে যাই।
প্রাসাদজন্ম
রাজবাড়িতে পুকুর নেই। প্রাসাদের পেছনে পুকুর কাটার দায়িত্ব
পেয়েছি আমি। শান বাধানো ঘাট, মহারানীর পুষ্করিনীর শখ। আর মহারাজের শখ মাছ ধরা।
আমি রোজ পুকুর কাটি।
আমি রোজ পুকুরের মাটি তুলি।
মহারানী দেখেন আর দুঃখ করেন। একজন মাটি কাটা শ্রমিকের প্রতি
তার খুব মায়া হয়।মায়া গভীর হলে পুকুরও গভীর হয়।
তিনমাস পর পুকুর কাটা শেষ হলে আমি রানীর শখের পুকুরে যৌবন
ধুয়ে বাড়ি ফিরি। এখন পুকুরে অনেক জল, মাছেরা তড়পায়। রাজা তো ছিপ ফেলে বসে আছেন, কী
মাছ উঠবে ছিপে—তা শুধু প্রাসাদের ঈশ্বর ও নারী জানেন।
অদ্ভুত পরিপ্রেক্ষিতের ভেতর আমাদের স্বয়ংক্রিয় চলনগুলি এভাবেই নিবিষ্ট হয়।
ReplyDelete