বাক্‌ ১৫০ ।। শতদ্রু মজুমদার


 

পঞ্চাশ শব্দের অণুগল্প

 

পঞ্চাশ শব্দের অণুগল্প লিখতে হবেএকটা পত্রিকা থেকে চেয়েছেকিন্তু লিখতে গিয়ে আমি হিমশিম

বউ বলল: আরও অণু করে ভাবো

—সেটা আবার কী?

—অণুগল্পের কাঁধটা খুব সরু বেশি ভার নিতে পারবে না!

—জানি

—সব ভুলে গিয়ে নিজে অণু হয়ে যাও

—মানে?

—অণুগল্প একটা ঝলক— আদি, অন্ত কিছুই নেই!

—কিন্তু আমার তো আছে!

—ওই জন্যেই তো পারছ না

হাল ছেড়ে দিলাম

 

কিন্তু এই ব্যাপারটা নিয়ে রণিতা পঞ্চাশ শব্দের একটা অণুগল্প লিখে ফেলল!

 

 

 

 

তারপর

 

খুব ছোটোবেলায় গল্প বলে ঘুম পাড়াত আমার মা সেগুলো বানানো গল্প কিন্তু দারুণ। ঘুম ছুটে যেত মা ঘুমিয়ে পড়ত আমি ঠেলা মেরে বলতাম: তারপর কী হল?

—এখন ঘুমিয়ে পড়!

—তারপর কী হল বলো না

—মনে পড়ছে না কাল বলবএখন ঘুমিয়ে পড়!

কিন্তু পরের দিনও একই অবস্থা তারপর যে কী হল জানা হল না

 

২.

 

আমার ছেলেকে গল্প বলতাম তার কোনও আগ্রহ ছিল নাসম্পূর্ণ গল্পই শোনাতাম গল্প শেষ হবার আগেই সে ঘুমিয়ে পড়ত

 

৩.

 

আমার নাতনির নাম পাখি সারাক্ষণ বকরবকররাত্তিরে ওকে গল্প শোনাতাম শুনতে শুনতে কখনও ঘুমিয়ে পড়ত সে কখনও আমিগল্পের মাঝখানে থেমেও যেতাম কিন্তু পাখি কখনওই বলেনি: তারপর কী হল?

একদিন সে বলল: মা বলেছে ইংলিশে স্টোরি বলতে

—এ তো রূপকথাকী অনুবাদ করব! টুনটুনির গল্প, ঠাকুমার ঝুলির কি ট্রান্সলেশন সম্ভব?

—প্লিজ ডোন্ট টেল বেঙ্গলি স্টোরি

 

৪.

 

পাখি আর আমার ঘরে ঢোকে না নিশ্চয় ওর মার নির্দেশ ইংরেজি মিডিয়ামে পড়ে প্রচণ্ড চাপ পড়া ছাড়াও নাচ, আবৃত্তি, ছবি আঁকা

মার  হুকুম বাবার ধমককোনও ব্যাপারে কৌতূহল নেই আগ্রহ নেই সবই রুটিনমাফিক

 

৫.

 

ও যখন বড়ো হবে তখন আমি এই পৃথিবীতে থাকব নাতাই মেয়েটার ভবিষ্যৎও আমার কাছে অজানাই থেকে যাবে

1 comment:

  1. খুব ভাল লাগল বাস্তব নিয়ে লেখা গল্পটা

    ReplyDelete